সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ০২:৫৬ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
ফুলকুঁড়ি আসর এর ফাইনাল ক্রিকেট টুর্নামেন্টের অনুষ্ঠিত আওয়ামী ঘরানার বিতর্কিত লোকদের দিয়ে উজিরপুর উপজেলা শ্রমিক দলের কমিটি গঠন করার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সান্টু খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের সুস্থতা কামনায় গৌরনদীতে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গৌরনদীতে এতিমখানা ও মাদ্রাসার দরিদ্র, অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বরিশালে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কারাবন্ধী ও রাজপথে সাহসী সৈনিকদের সম্মানে ইফতার দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায়, দখিনের খবর পত্রিকা অফিসের তালা ভেঙে কোটি টাকার লুণ্ঠিত মালামাল বাড়িওয়ালার পাঁচ তলা থেকে উদ্ধার, মামলা নিতে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা গলাচিপা উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন, সভাপতি হাফিজ, সম্পাদক রুবেল চোখের জলে বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী বাবুলকে চির বিদায় বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন কারামুক্ত উচ্চ আদালতে জামিন পেলেন বরিশাল মহানগর বিএনপির মীর জাহিদসহ পাঁচ নেতা
ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জলোচ্ছাসের পরে পায়রার তীব্র ভাঙ্গণ, নিঃস্ব শতাধিক পরিবার

ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জলোচ্ছাসের পরে পায়রার তীব্র ভাঙ্গণ, নিঃস্ব শতাধিক পরিবার

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পায়রা নদীতে বিপৎসীমার উপরে পানি বৃদ্ধি পায়। ওই পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে পায়রা নদীর ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারন করেছে। জলোচ্ছাসে পায়রা নদী তীরবর্তী মাটি আগলা হয়ে আমতলী-তালতলী উপজেলার অন্তত ৫০ একর জমি ও অর্ধ শতাধিক বাড়ী ভেঙ্গে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। জমি ও বসত ভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে শতাধিক পরিবার। দ্রুত নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা রক্ষার দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। জানাগেছে, ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে গত সোমবার থেকে পায়রা নদীতে পানি বৃদ্ধি শুরু করে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অব্যহত ছিল। চার দিনে পর্যায়ক্রমে পানি বিপৎসীমার উপরে ৬২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পায়। ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জলোচ্ছাসের তীব্রতা ঘুর্ণিঝড় আইলা, মহাসেন, ফণি ও আম্ফানের চেয়ে কয়েকগুন বেশী ছিল বলে জানান বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। চার দিনের জলোচ্ছাসে পায়রা নদী তীরের তলদেশের মাটি আগলা হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার রাত থেকে পানি কমতে শুরু করে। জলোচ্ছাসের বিপুল পরিমান জলরাশি সমুদ্রে নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পায়রা নদীর ভাঙ্গণ তীব্র আকার ধারন করছে। গত তিন দিনে আমতলী-তালতলী উপজেলার পায়রা নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় অন্তত ৫০ একর ফসলি জমি এবং অর্ধ শতাধিক বাড়ী নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এতে পায়রার পাড় সংলগ্ন বসবাসরত মানুষ ঝুঁকির মধ্যে দিনাতিপাত করছে। ফসলি জমি ও বাড়ী হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে শতাধিক পরিবার। দ্রুত পায়রার ভাঙ্গন থেকে ফসলি জমি ও বাড়ী ঘর রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষ। স্থানীয়রা বলেন, নদীর পানি কমতে শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই পায়রা নদী বেশী আকারে ভাঙ্গছে। গত ৩ দিনে যা ভেঙ্গেছে গত ছয় মাসেও এত ভাঙ্গেনি। তার আরো বলেন, জলোচ্ছাসে নদী পাড়ের তলদেশের মাটি আগলা হয়ে যাওয়ায় ভাঙ্গণের তীব্রতা দেখা দিয়েছে। দ্রুত নদী ভাঙ্গণের হাত থেকে রক্ষার দাবী জানান তারা। শনিবার খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, পায়রা নদী সংলগ্ন বালিয়াতলী, ঘোপখালী, পশুরবুনিয়া, আড়পাঙ্গাশিয়া, লোচা, পানি উন্নয়ন বোর্ড, আঙ্গুলকাটা, গুলিশাখালী, গুলিশাখালীর জেলে পল্লী, পঁচাকোড়ালিয়া, ছোটবগী, মৌপাড়া, গাবতলী, চরপাড়া, তালতলী, খোট্টারচর, তেঁতুলবাড়িয়া, জয়ালভাঙ্গা, নলবুনিয়া, ফকিরহাট, নিদ্রাসকিনা ও আমখোলাসহ নদী সংলগ্ন স্থানে নদী ভাঙ্গণ তীব্র আকার ধারন করেছে। আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বালিয়াতলী গ্রামের মোঃ সাইদুল আকন বলেন, এই বন্যার মত এত পানি ঘুর্ণিঝড় সিডরের পর হয়নি। বন্যার পানি কমার সাথে সাথে নদী ভাঙ্গণের পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরো বলেন, গত ৩ তিন দিনে বালিয়াতলী এলাকায় অন্তত দুই একর জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। দ্রুত নদী ভাঙ্গণ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তিনি। আমতলী পশ্চিম ঘটখালী গ্রামের বৃদ্ধা মালেকা বেগম কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, মোর সব শ্যাষ অইয়্যা গ্যাছে। আগেতো য্যা গ্যাছে, এহোন বাহিডা এ্যাকছের ভাঙ্গে। একই গ্রামের রাকিবুল ইসলাম ও আব্দুল্লাহ বলেন, ভাঁটা শুরু হলেই নদী ভাঙ্গন শুরু হয়। গত তিন দিন ধরে বেশী আকারে নদী ভাঙ্গছে। আমতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সিএম রেজাউল করিম বলেন, পায়রার ভাঙ্গণে ফসলি জমি হারিয়ে যাচ্ছে। ফসলি জমি রক্ষায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান তিনি। বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কায়সার আলম বলেন, জলোচ্ছাসের পরে নদী ভাঙ্গনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। নদীর তীর সংরক্ষনের ব্যবস্থা গ্রহনে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ে প্রকল্প ইতোমধ্যে দেয়া হয়েছে। প্রকল্প পাশ হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করবো। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের এ্যাগ্রোফরেস্ট্রি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোঃ আলমগীর কবির বলেন, নদীতে পলি জমে তলদেশ ভরাট হয়ে যায় এবং স্থানে স্থানে বিশাল আকৃতির ডুবোচরের সৃষ্টি হয়। ফলে পানি প্রবাহ বাধা গ্রস্থ হয় এবং স্থানে স্থানে গতিপথ পরিবর্তন করে। যে সকল স্থানে গতিপথ পরিবর্তন করে ওই সকল স্থানে নদী ভাঙ্গন বৃদ্ধি পায়। ঘুর্ণিঝড় ও তৎপরবর্তী জলোচ্ছাসের শেষে বিপুল পরিমান জলরাশি সমুদ্রে নেমে যাওয়ার সময় নদী ভাঙ্গনের তীব্রতা আরো বৃদ্ধি পায়। তিনি আরো বলেন, ভূমি ক্ষয় রোধে উপযোগী কৃষি প্রযুক্তিসমুহের ব্যবহার, প্রকৌশল প্রযুক্তি সমুহের ব্যবহার (ব্লক ও প্রাচীর ওয়াল) এবং সকল পতিত উন্মুক্ত স্থান সমুহে বনায়নের মাধ্যমে আচ্ছাদিত করে নদী ভাঙ্গণ রোধ করা যেতে পারে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com